১.পটভূমি:
অবাধ তথ্য প্রবাহ জনগনের ক্ষমতায়নের অন্যতম পূর্বশর্ত। বিশেষ করে অনগ্রসর জনগনের মাঝে তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে তাদের জীবনযাত্রার মানে ইতিবাচক পরিবর্তন আনায়ন করা সম্ভব। তৃণমূল পর্যায়ে ব্যপক জনগোষ্ঠীর মাঝে তথ্যসেবা পৌঁছে দিয়ে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা অপরিহার্য। এ লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউনিয়ন পর্যায়ে পর্যায়ক্রমে ‘ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র (ইউআইএসসি)’স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইউআইএসসি হচ্ছে এমন একটি অত্যাধুনিক তথ্য সেন্টার (টেলিসেন্টার)- যার উদ্দেশ্য হলো তৃণমূল মানুষের দোরগোড়ায় তথ্যসেবা নিশ্চিত করা। ইউআইএসসিতে উল্লেখযোগ্য সুবিধাসমূহের মধ্যে রয়েছে- খুব কম সময়ে ও কম খরচে দেশে-বিদেশে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ইন্টারনেট সংযোগ; ইনফরমেশন সুপার হাইওয়ের সাথে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের শত-সহস্র ওয়েব-সাইটে ব্রাউজ করে জ্ঞান-বিজ্ঞানের আদান-প্রদান করার সুবিধা; অফলাইন তথ্যভান্ডারে ভিভিও, অডিও, এনিমেশন এবং টেক্সট ফরম্যাটে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আইন ও মানবাধিকার, কর্মসংস্থান, বাজার, বিভিন্ন সরকারী ফরম প্রভৃতি বিষয়ক তথ্য ও সেবা; আরো থাকবে কম খরচে কম্পিউটারসহ বিভিন্ন দক্ষতাবৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা এবং কম্পিউটারসংশিষ্ট বিভিন্ন বাণিজ্যিক সেবা, যেমন - স্বল্প মূল্যে কম্পোজ, প্রিন্টিং, ফটোকপি, ফটোতোলা, স্ক্যানিং প্রভৃতি সেবা।
২. প্রাসঙ্গিকতা
‘ডিজিট্যাল’ বাংলাদেশ গড়া বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রধান নির্বাচনী অঙ্গীকার। এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে তৃণমূল পর্যায়ে অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করা একান্ত প্রয়োজন, যা ইউআইএসসি স্থাপনের মাধ্যমে করা সম্ভব। তাছাড়া ইউআইএসসি কার্যক্রম সরকারের তথ্য অধিকার আইন ২০০৮ এর লক্ষ অর্জনেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম। এদিকে সরকার World Summit on Information Society (WSIS) Plan of Action- 2003 -এর অন্যতম স্বাক্ষরদাতা হিসেবে জনগনের মাঝে তথ্য প্রযুক্তি সেবা পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর। সরকারের দারিদ্র বিমোচন কর্মসূচির লক্ষ অর্জনেও অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার প্রতি গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। তাই ২০২০ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ হবে জ্ঞান চর্চা এবং এলাকার সকলপ্রকার উন্নয়ন কর্মকান্ডের কেন্দ্র বিন্দু হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ইউআইএসসি একটি যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
৩. প্রাতিষ্ঠানিক সংশ্লিষ্টতা:
ইউআইএসসি ইউনিয়ন ভিত্তিক একটি তথ্য সেবা কেন্দ্র হলেও এর সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্যস্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক সংশ্লিষ্টতা নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
৩.১ ইউনিয়ন পরিষদের ভূমিকা:
ইউনিয়ন পরিষদ হচ্ছে ইউআইএসসি’র মূল উদ্যোক্তা। ইউনিয়ন পরিষদ ইউআইএসসি কার্যক্রমের সার্বিক তত্বাবধান, পরিচালনা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত করবে। তবে ইউনিয়ন পরিষদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে-
- কেন্দ্র স্থাপনের জন্য উপযুক্ত কক্ষ বরাদ্দ প্রদান;
- উদ্যোক্তার অংশের বাইরে প্রয়োজনীয় উপকরণ ক্রয় ও সরবরাহ করা;
- কেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ফার্নিচার ক্রয় ও সরবরাহ করা;
- বিদ্যুত সংযোগ, পানির সংযোগ ও অন্যান্য প্রযোজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা প্রদান;
- প্রযোজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা;
- ‘ইউআইএসসি পরিচালনা কমিটি’র কার্যক্রম বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান;
- ইউআইএসসি’র উন্নয়নে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায় থেকে আর্থিক ও অবকাঠামোগত সহায়তা যোগান দিতে ভূমিকা রাখা;
- ইউআইএসসি’র কাজের পরিবিক্ষণ ও মূল্যায়ণ করা;
- পাক্ষিক প্রতিবেদন প্রণয়ন।
৩.২ উপজেলা প্রশাসনের (ফোকাল পয়েন্টের) ভূমিকা:
1. ইউআইএসসির জন্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চূড়ান্ত করা;
2. ইউআইএসসিকে একটি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রযোজনীয়
3. প্রশাসনিক, কারিগরী ও আর্থিক সহায়তা প্রদানে/অর্জনে সহায়তা করা;
4.স্থানীয় অন্যান্য সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে ইউআইএসসির সম্পৃক্ততা ঘটাতে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করা;
5. সকল ইউনিয়নে কম্পিউটার, প্রিন্টর, ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ক্রয়ের ব্যবস্থা করা;
6. ই-সেবা ও ই-গভন্যান্স সম্পর্কে জনপ্রতিনিধি ও জনমনে স্বচ্ছ ধারণা তৈরী করা;
7. ইউআইএসসি’র কাজের পরিবিক্ষণ ও মূল্যায়ণ করা;
8. প্রতি মাসে কমপক্ষে একবার অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা করা ।
9. পাক্ষিক ভিত্তিতে এসকল কেন্দ্র ভিজিট করা ।
10. নির্ধারিত ফর্মে মাসিক প্রতিবেদন জেলা ফোকাল পয়েন্টের নিকট প্রেরণ করা।
৩.৩ জেলা প্রশাসনের (ফোকাল পয়েন্টের) ভূমিকা:
1. ইউআইএসসি কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইউনিয়ন ও উপজেলা ফোকাল পয়েন্টদের কার্যক্রম মনিটর করা।
2. ইউআইএসসির জন্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা ফোকাল পয়েন্টকে সার্বিক সহায়তা করা;
3. ইউআইএসসিকে একটি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রযোজনীয়
4. প্রশাসনিক, কারিগরী ও আর্থিক সহায়তা প্রদানে/অর্জনে সহায়তা করা;
5. স্থানীয় অন্যান্য সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে ইউআইএসসির সম্পৃক্ততা ঘটাতে জেলা সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করা;
6. ই-সেবা ও ই-গভন্যান্স সম্পর্কে জনপ্রতিনিধি ও জনমনে স্বচ্ছ ধারণা তৈরী করা;
7. মাঠ পর্যায়ের প্রশিক্ষণ বাস্তবায়ন করা;
8. ইউআইএসসি’র কাজের পরিবিক্ষণ ও মূল্যায়ণ করা;
9. প্রতি মাসে কমপক্ষে একবার অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা করা।
10. মাঠ ভিজিটকালে এসল কেনদ্র অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভিজিট করা।
11. নির্ধারিত ফর্মে মাসিক প্রতিবেদন কেনদ্রীয় ফোকাল পয়েন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণ করা।
৩.৪ স্থানীয় সরকার বিভাগ/এনআইএলজি’র ভূমিকা:
- ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউআইএসসি স্থাপনে নীতিগত ও আইনগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ;
- ইউআইএসসি স্থাপনের জন্য মাঠ পর্যায়ে সার্কুলার জারি করা;
- জাতীয় পর্যায়ে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা;
- ইউআইএসসির জন্য আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য দাতা সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান কে এ কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত করা;
- কাজের সুষ্ঠু সমন্বয়ের জন্য আন্তমন্ত্রনালয় সংযোগ স্থাপনে সহায়তা প্রদান করা;
- ইউআইএসসি’র কাজের পরিবিক্ষণ ও মূল্যায়ণ করা;
- পাক্ষিক প্রতিবেদন প্রণয়ন।
৩.৫ একসেস্-টু-ইনফরমেশন (A2I) প্রোগ্রাম–এর ভূমিকা:
- এটুআই ইউআইএসসির জন্য ডিজিটাল তথ্যভান্ডার তৈরি করে তা বিনামূল্যে সরবরাহ করবে এবং
- ইউনিয়ন পরিষদ এবং উদ্যোক্তার সামর্থ্যের বিকাশ ঘটাতে (Capacity Building) কারিগরি সহায়তা দেবে।
৩.৬ উন্নয়ন সহযোগী ও এনজিওদের ভূমিকা:
- প্রকল্পভিত্তিক আর্থিক ও কারিগরী সহায়তা প্রদান;
- এলাকাভিত্তিক স্বেচ্ছাশ্রম ও অর্থায়নের মাধ্যমে একর্মসূচি বাস্তবায়নে সার্বিক সহায়তা করা;
৩.৭ টেকনিক্যাল সাপোর্ট অর্গানাইজেশনের ভূমিকা:
- দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা প্রদান;
- উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা প্রদান;
- স্থানীয় উদ্যোক্তা নির্বাচনে সহায়তা প্রদান করা;
- অপারেশন ও মেইন্টেনেন্স এর জন্য সুনির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে কারিগরী সহায়তা প্রদান।
৪. প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো:
৪.১ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের শর্তাবলী:
ইউআইএসসি স্থাপনের জন্য-
১. ১ম পর্যায়ের উপযোগী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে-
- নতুন ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স;
- বিদ্যুৎ সংযোগ;
- কম্পিউটার ও প্রিন্টার আছে এমন ইউনিয়ন;
- ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন বা কাছাকাছি হাট-বাজার;
- ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় সবসময় স্থানীয় মানুষের সমাগম;
- ইউনিয়ন পরিষদ বিশেষ করে উদ্যোগী চেয়ারম্যান;
- স্থানীয় বেকার যুবক ইউআইএসসি পরিচালনা করার আগ্রহ ইত্যাদি।
২. ২য় পর্যায়ে রয়েছে-
- নতুন ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স নেই তবে পুরাতন ভবন ব্যবহারযোগ্য;
- বিদ্যুৎ সংযোগ আছে;
- কম্পিউটার ও প্রিন্টার না থাকলেও এলজিএসপি ও রাজস্ব তহবিল থেকে কেনা যাবে;
- ইউনিয়ন পরিষদ বিশেষ করে উদ্যোগী চেয়ারম্যান;
- স্থানীয় বেকার যুবক ইউআইএসসি পরিচালনা করার আগ্রহ ইত্যাদি।
৩. ৩ য় পর্যায়ে রয়েছে-
- বিদ্যুৎ সংযোগ নেই এমন ইউনিয়ন সেখানে সোলার প্যানেল বসানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে;
- কম্পিউটার ও প্রিন্টার না থাকলেও এলজিএসপি ও রাজস্ব তহবিল থেকে কেনা যাবে;
- ইউনিয়ন পরিষদ বিশেষ করে উদ্যোগী চেয়ারম্যান;
৪.২ ইউআইএসসি ব্যবস্থাপনা :
ইউআইএসসি পরিচালনার জন্য ৭-৯ সদস্যের ‘ইউআইএসসি পরিচালনা কমিটি’ থাকবে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদাধিকার বলে এই কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এ কমিটির মেয়াদ হবে দু’বছর। ইউআইএসসি’র সাধারণ কমিটির সদস্যদের সরাসরি ভোটে ইউআইএসসি পরিচালনা কমিটি গঠিত হবে। তবে একটি পূর্নাঙ্গ কমিটি নির্বাচিত হওয়ার পূর্বে প্রথম বছর সর্বোচ্চ এক বছরের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যগণ এলাকাবাসীদের মধ্যে সৎ, উদ্যোগী ও দক্ষ লোকের সমন্বয়ে একটি এড-হক কমিটি গঠন করবে। কমিটির মোট সদস্যে কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশ সদস্য নারী হবেন; কমিটিতে বিভিন্ন পেশার মানুষের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। ইউনিয়ন পরিষদের সচিব কমিটির দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক ও অন্যন্য সহযোগিতা প্রদান করবেন।
ইউআইএসসি সাধারণ কমিটি’র গঠন হবে নিম্নরূপ-
1) ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ (পদাধিকার বলে);
2) ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত সকল সরকারী কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ (পদাধিকার বলে);
3) ইউনিয়ন পরিষদের সকল সরকারী ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ (পদাধিকার বলে);
4) সরকার অনুমোদিত পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনের প্রধানগণ (পদাধিকার বলে);
5) ইউআইএসসি পরিচালনায় উৎসাহী এবং এলাকায় গ্রহণযোগ্য ব্যাক্তিদের মধ্যথেকে ওয়ার্ড প্রতি কমপক্ষে ০৬(ছয়) জন ব্যক্তি স্থানীয় জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে কমিটির সাধারণ সদস্য হিসেবে অর্ন্তভুক্ত হবেন। ওয়ার্ড মেম্বরগণ,স্থানীয় ওয়ার্ডের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের (মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ইত্যাদি) প্রধানগণ আলোচনা সাপেক্ষে ওয়ার্ড প্রতিনিধি মনোনয়ন করবেন।
ইউআইএসসি কার্যনির্বাহী কমিটির গঠন হবে নিম্নরূপ-
1) সভাপতি- ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (পদাধিকার বলে)
2) সহ-সভাপতি - সাধারণ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত
3) সাধারণ সম্পাদক- সাধারণ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত
4) অর্থ নম্পাদক- সাধারণ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত
5) সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণ ও প্রচার সম্পাদক- সাধারণ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত
6) দপ্তর সম্পাদক- সাধারণ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত
7) নির্বাহী সদস্য (তিন জন)- সাধারণ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত
৪.৩ ব্যবস্থাপনা কমিটির দায়িত্ব:
‘ইউআইএসসি পরিচালনা কমিটি’ ইউআইএসসি পরিচালনার সার্বিক দায়িত্ব পালন করবে। এ কমিটির সুনির্দিষ্ট দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে-
- স্থানীয় উদ্যোক্তা নির্বাচন;
- ইউআইএসসির প্রয়োজনীয় উপকরণ ক্রয় ও সংগ্রহ;
- ইউআইএসসির উপকরণ স্থাপন ও রক্ষনাবেক্ষন কাজে উদ্যোক্তাকে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান করা;
- এলাকার জনগনের মাঝে তথ্যসেবা গ্রহনে ব্যপক আগ্রহ সৃষ্টির জন্য উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সার্বিক সহায়তা প্রদান করা;
- ইউআইএসসির আয়-ব্যযের হিসাব এবং রিপোটিং পদ্ধতি যথাযথভাবে সম্পন্ন করার উদ্যোক্তাকে সার্বিক সহয়তা প্রদান করা;
- প্রতি মাসে কমপক্ষে একটি সভা আয়োজন করে ইউআইএসসির কার্যক্রম পর্য়ালোচনা করা;
- দ্বিবার্ষিক সাধারণসভা আয়োজন করে ইউআইএসসি’র আয়-ব্যয়ের হিসাব ও পূর্নাঙ্গ প্রতিবেদন সাধারণ সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন করা।
৪.৪ স্থানীয় উদ্যোক্তা:
কম্পিউটার ব্যবহারের নূন্যতম ধারনা রয়েছে এলাকার এমন শিক্ষিত যুবকদের মধ্য থেকে উদ্যোক্তা নির্বাচন করতে হবে। তবে মহিলা এবং বেকার যুবকদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। ‘ইউআইএসসি পরিচালনা কমিটি’ সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে উদ্যেক্তা নির্বাচন করবে। ইউআইএসসি পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত উদ্যোক্তাগণ ইউনিয়ন পরিষদের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারী হবেন না। ইউআইএসসি স্থাপনের মোট খরচের একটি অংশ তারা প্রদান করবেন। বিনিময়ে তারা ইউআইএসসি স্থাপনের পরবর্তী তিন বছর ইউআইএসসি থেকে প্রাপ্ত আয় নিজেরা গ্রহণ করবেন। তিন বছর পর উদ্যোক্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের পারষ্পরিক স্বার্থ বিবেচনায় রেখে ইউনিয়ন পরিষদ আয়-ব্যয়ের বন্টন নীতিমালা নির্ধারন করবে।
৪.৫স্থানীয় উদ্যোক্তা নির্বাচনের শর্তাবলী:
- স্থানীয় উদ্যোক্তা (শিক্ষিত বেকার যুবক)- যার ২০,০০০ - ৫০,০০০ বা তারও অধিক টাকা বিনিয়োগ করার সামর্থ্য ও আগ্রহ রয়েছে;
- যিনি উদ্যোগী, পরিশ্রমী ও সংগঠক;
- এলাকার জনগণকে তথ্য সেবা গ্রহণে আগ্রহী করে তোলার জন্য প্রয়োজনী উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি পরিচালনা করার আগ্রহ ও দক্ষতা;
- এলাকায় যিনি স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন;
- নৈতিক স্খলন বা শৃঙ্খলা বিরোধী কাজে অভিযুক্ত নয়;
- যার কম্পিউটার পরিচালনা ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা বা আগ্রহ আছে;
- যার ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য তথ্যসেবা নিয়ে কাজ করার আগ্রহ আছে।
৪.৬ স্থানীয় উদ্যোক্তার দায়িত্ব ও কর্তব্য
- ইউআইএসসি পরিচালনা কমিটি’র অনুমোদন সাপেক্ষে দিনের নির্দিষ্ট সময় ইউআইএসসি জনগণের সেবা গ্রহণের জন্য খোলা রাখা;
- জনগণকে তথ্যসেবা প্রদান করা;
- ইউআইএসসির উপকরণ স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ করা;
- এলাকার জনগনের মাঝে তথ্যসেবা গ্রহণে ব্যপক আগ্রহ সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা;
- ইউআইএসসির আয়-ব্যযের হিসাব এবং রিপোটিং যথাযথভাবে সম্পন্ন করা;
- ইউআইএসসি পরিচালনা কমিটি’র মাসিক/দ্বিবার্ষিক বা অন্যান্য সভায় কমিটির চাহিদা অনুসারে প্রযোজনীয় তথ্য প্রদান করা।
৫. অবকাঠামো:
ইউনিয়ন পরিষদের একটি উপযুক্ত কক্ষে ইউআইএসসি স্থাপিত হবে। ইউনিয়ন পরিষদ এ কেন্দ্রের সার্বিক নিরাপত্তা এবং কেন্দ্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক সহায়তা প্রদান করবে।
৬. উপকরণ:
এলাকার সর্বসাধারণের জন্য উন্নত তথ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি ইউআইএসসিতে একাধিক কম্পিউটার ও সংশ্লিষ্ট উপকরণ প্রয়োজন হবে, যা পর্যায়ক্রমে স্থাপন করা সম্ভব। তবে নূন্যতম স্ট্যাবিলাইজারসহ একটি কম্পিউটার, একটি সাদাকালো প্রিন্টার, একটি কালার প্রিন্টার, অন-লাইন সংযোগ স্থাপনের জন্য একটি মডেম, একটি স্ক্যানার, একটি ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে একটি ইউআইএসসি-এর কার্যক্রম প্রাথমিকভাবে শুরু করা সম্ভব। প্রাথমিক পর্যায়ে এ কাজের জন্য সর্বসাকুল্যে ১০০,০০০ (এক লক্ষ) টাকা প্রয়োজন হতে পারে। তবে পূর্ণাঙ্গ ইউআইএসসি পরিচালনার জন্য নিম্ন লিখিত উপকরণ দরকার -
· স্ট্যাবিলাইজারসহ ২টি কম্পিউটার
· ১টি লেজার প্রিন্টার
· ১টি কালার প্রিন্টার
· ১টি মডেম
· ১টি স্ক্যানার মেশিন
· ১টি ডিজিটাল ক্যামেরা
· ১টি ওয়েবক্যাম
· বড় স্ক্রিনসহ ১টি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর
· ১টি জেনারেটর
স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে কোন ইউআইএসসিতে উপরকরণ এর চেয়ে কম বেশি থাকতে পারে।
৭. দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম:
ইউআইএসসি পরিচালনাকারী উদ্যোক্তাদের প্রযোজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি কেন্দ্রীয় ভাবে এবং স্থানীয় ভাবে (যখন যা প্রযোজ্য) আয়োজন করা হবে। পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা ফোকাল পয়েন্ট এবং এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কমিটির সদস্যদের এ কর্মসূচি সম্পর্কে সার্বিক ধারণা প্রদান করার জন্য সময় সময় অরিয়েন্টেশন কর্মশালা আয়োজন করা হবে।
৮. উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম:
ইউআইএসসি থেকে তথ্য সেবা গ্রহণে ব্যপক জনগোষ্ঠিকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি গ্রহন করা হবে। এ কর্মসূচি স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে বাস্তবায়ন করা হবে। জাতীয় পর্যায়ের উল্লেখযোগ্য কর্মসূচির মধ্যে থাকবে- টিভি ও রেডিও প্রোগ্রাম, সংবাদপত্রে প্রতিবেদন ও ফিচার, সেমিনার, কর্মশালা ইত্যাদি। স্থানীয় পর্যায়ে মূলতঃ উদ্যোক্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের যৌথ উদ্যোগে ব্যাক্তিগত যোগাযোগ, সভা-সমাবেশ, র্যালি, মাইকিং, হাটবাজারে প্রদর্শনী, লিফলেট, পোষ্টার, স্টিকার বিতরণ, স্কুল-কলেজ পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন ইত্যাদি কর্মসূচি বাস্তবায়ন। একাজে উপজেলা ও জেলা ফোকাল পয়েন্টবৃন্দ সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।
ইউআইএসসিতে তথ্যসেবার তালিকা
ইউআইএসসির তথ্যভান্ডারে তথ্যসেবা থাকবে দু’ভাবে - অফলাইন ও অনলাইনে। এই তথ্যভান্ডার তথ্য ও সেবা সাজানো থাকবে এনিমেশন, ভিডিও, অডিও এবং টেক্সট এই চার ফরমেটে।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য (অনলাইন):ইউআইএসসিতে ইন্টারনেট সংযোগ থাকবে যার মাধ্যমে ইউনিয়নের যে কোন ব্যক্তি সারা পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হবে। দেশি ও বিদেশী বিভিন্ন ওয়েব সাইট থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোন তথ্য এর মাধ্যমে খুঁজে পাওয়া সম্ভব।
অফলাইন তথ্যভান্ডার :ইন্টারনেটের বাইরে এক বিশাল তথ্যভান্ডার থাকবে ইউআইএসসিতে। এই (অফলাইন) তথ্যভান্ডারে থাকবে জীবিকাভিত্তিক বিভিন্ন তথ্যসেবা; যেমন - কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আইন ও মানবাধিকার, কর্মসংস্থান, বাজার, বিভিন্ন সরকারী ফরম প্রভৃতি।
বাণিজ্যিক সেবা (১):ইউআইএসসিতে সুলভ মূল্যে বাণিজ্যিক সেবা পাওয়া যাবে; যেমন - ইমেইল পাঠানো, ইন্টারনেট ব্রাউজিং করা, কম্পিউটার কম্পোজ করা, প্রিন্টিং করা, ফটোতোলা (কালার), স্ক্যানিং করা, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ভাড়া নেয়া প্রভৃতি।
বাণিজ্যিক সেবা (২):ইউআইএসসিতে সুলভ মূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ এবং বিভিন্ন দক্ষতাবৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ এর ব্যবস্থা থাকবে। দক্ষতাবৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ হবে সহজ, সুলভ ও স্থানীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন আয় বৃদ্ধিমূলক উদ্যোগ এর উপর; যেমন - বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য তৈরি, বিভিন্ন শিল্প উপকরণ তৈরি (যেমন - মোমবাতি), টেইলারিং, বৈদ্যুতিক উপকরণ মেরামত, জৈব সার উৎপাদন প্রভৃতি।
পরামর্শ সেবা:ইউনিয়ন পরিষদ ইউআইএস
১.পটভূমি:
অবাধ তথ্য প্রবাহ জনগনের ক্ষমতায়নেরঅন্যতম পূর্বশর্ত। বিশেষ করে অনগ্রসর জনগনের মাঝে তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করারমাধ্যমে তাদের জীবনযাত্রার মানে ইতিবাচক পরিবর্তন আনায়ন করা সম্ভব। তৃণমূলপর্যায়ে ব্যপক জনগোষ্ঠীর মাঝে তথ্যসেবা পৌঁছে দিয়ে জনগণের ক্ষমতায়ননিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা অপরিহার্য। এলক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউনিয়ন পর্যায়ে পর্যায়ক্রমে‘ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি)’স্থাপনেরউদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইউডিসি হচ্ছে এমন একটি অত্যাধুনিক তথ্য সেন্টার(টেলিসেন্টার)- যার উদ্দেশ্য হলো তৃণমূল মানুষের দোরগোড়ায় তথ্যসেবা নিশ্চিতকরা। ইউডিসিতে উল্লেখযোগ্য সুবিধাসমূহের মধ্যে রয়েছে- খুব কম সময়ে ও কমখরচে দেশে-বিদেশে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ইন্টারনেট সংযোগ; ইনফরমেশন সুপারহাইওয়ের সাথে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের শত-সহস্রওয়েব-সাইটে ব্রাউজ করে জ্ঞান-বিজ্ঞানের আদান-প্রদান করার সুবিধা; অফলাইন তথ্যভান্ডারে ভিভিও, অডিও, এনিমেশন এবং টেক্সট ফরম্যাটে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আইন ও মানবাধিকার, কর্মসংস্থান, বাজার, বিভিন্ন সরকারীফরম প্রভৃতি বিষয়ক তথ্য ও সেবা; আরো থাকবে কম খরচে কম্পিউটারসহ বিভিন্নদক্ষতাবৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা এবং কম্পিউটারসংশিষ্ট বিভিন্নবাণিজ্যিক সেবা, যেমন - স্বল্প মূল্যে কম্পোজ, প্রিন্টিং, ফটোকপি, ফটোতোলা, স্ক্যানিং প্রভৃতি সেবা।
২. প্রাসঙ্গিকতা
‘ডিজিট্যাল’ বাংলাদেশ গড়া বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রধান নির্বাচনী অঙ্গীকার। এঅঙ্গীকার বাস্তবায়নে তৃণমূল পর্যায়ে অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করা একান্তপ্রয়োজন, যা ইউডিসি স্থাপনের মাধ্যমে করা সম্ভব। তাছাড়া ইউডিসিকার্যক্রম সরকারের তথ্য অধিকার আইন ২০০৮ এর লক্ষ অর্জনেও উল্লেখযোগ্যভূমিকা রাখতে সক্ষম। এদিকে সরকার World Summit on Information Society (WSIS) Plan of Action- 2003 -এর অন্যতম স্বাক্ষরদাতা হিসেবে জনগনের মাঝেতথ্য প্রযুক্তি সেবা পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর। সরকারের দারিদ্র বিমোচনকর্মসূচির লক্ষ অর্জনেও অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার প্রতি গুরুত্বপ্রদান করা হয়েছে। তাই ২০২০ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ হবেজ্ঞান চর্চা এবং এলাকার সকলপ্রকার উন্নয়ন কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ইউডিসি একটি যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতেসক্ষম।
৩. প্রাতিষ্ঠানিক সংশ্লিষ্টতা:
ইউডিসিইউনিয়ন ভিত্তিক একটি তথ্য সেবা কেন্দ্র হলেও এর সুষ্ঠু বাস্তবায়নেরজন্যস্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা রয়েছে।প্রাতিষ্ঠানিক সংশ্লিষ্টতা নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
৩.১ ইউনিয়ন পরিষদের ভূমিকা:
ইউনিয়নপরিষদ হচ্ছে ইউডিসি’র মূল উদ্যোক্তা। ইউনিয়ন পরিষদ ইউডিসি কার্যক্রমেরসার্বিক তত্বাবধান, পরিচালনা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত করবে। তবে ইউনিয়নপরিষদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে-
- কেন্দ্র স্থাপনের জন্য উপযুক্ত কক্ষ বরাদ্দ প্রদান;
- উদ্যোক্তার অংশের বাইরে প্রয়োজনীয় উপকরণ ক্রয় ও সরবরাহ করা;
- কেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ফার্নিচার ক্রয় ও সরবরাহ করা;
- বিদ্যুত সংযোগ, পানির সংযোগ ও অন্যান্য প্রযোজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা প্রদান;
- প্রযোজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা;
- ‘ইউডিসি পরিচালনা কমিটি’র কার্যক্রম বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান;
- ইউডিসি’র উন্নয়নে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায় থেকে আর্থিক ও অবকাঠামোগত সহায়তা যোগান দিতে ভূমিকা রাখা;
- ইউডিসি’র কাজের পরিবিক্ষণ ও মূল্যায়ণ করা;
- পাক্ষিক প্রতিবেদন প্রণয়ন।
৩.২ উপজেলা প্রশাসনের (ফোকাল পয়েন্টের) ভূমিকা:
1. ইউডিসির জন্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চূড়ান্ত করা;
2. ইউডিসিকে একটি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রযোজনীয়
3. প্রশাসনিক, কারিগরী ও আর্থিক সহায়তা প্রদানে/অর্জনে সহায়তা করা;
4.স্থানীয় অন্যান্য সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে ইউডিসির সম্পৃক্ততা ঘটাতে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করা;
5. সকল ইউনিয়নে কম্পিউটার, প্রিন্টর, ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ক্রয়ের ব্যবস্থা করা;
6. ই-সেবা ও ই-গভন্যান্স সম্পর্কে জনপ্রতিনিধি ও জনমনে স্বচ্ছ ধারণা তৈরী করা;
7. ইউডিসি’র কাজের পরিবিক্ষণ ও মূল্যায়ণ করা;
8. প্রতি মাসে কমপক্ষে একবার অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা করা ।
9. পাক্ষিক ভিত্তিতে এসকল কেন্দ্র ভিজিট করা ।
10. নির্ধারিত ফর্মে মাসিক প্রতিবেদন জেলা ফোকাল পয়েন্টের নিকট প্রেরণ করা।
৩.৩ জেলা প্রশাসনের (ফোকাল পয়েন্টের) ভূমিকা:
1. ইউডিসি কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইউনিয়ন ও উপজেলা ফোকাল পয়েন্টদের কার্যক্রম মনিটর করা।
2. ইউডিসির জন্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উপজেলাফোকাল পয়েন্টকেসার্বিক সহায়তা করা;
3. ইউডিসিকে একটি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রযোজনীয়
4. প্রশাসনিক, কারিগরী ও আর্থিক সহায়তা প্রদানে/অর্জনে সহায়তা করা;
5. স্থানীয় অন্যান্য সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে ইউডিসির সম্পৃক্ততা ঘটাতে জেলা সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করা;
6. ই-সেবা ও ই-গভন্যান্স সম্পর্কে জনপ্রতিনিধি ও জনমনে স্বচ্ছ ধারণা তৈরী করা;
7. মাঠ পর্যায়ের প্রশিক্ষণ বাস্তবায়ন করা;
8. ইউডিসি’র কাজের পরিবিক্ষণ ও মূল্যায়ণ করা;
9. প্রতি মাসে কমপক্ষে একবার অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা করা।
10. মাঠ ভিজিটকালে এসল কেনদ্র অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভিজিট করা।
11. নির্ধারিত ফর্মে মাসিক প্রতিবেদন কেনদ্রীয় ফোকাল পয়েন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণ করা।
৩.৪ স্থানীয় সরকার বিভাগ/এনআইএলজি’র ভূমিকা:
- ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউডিসি স্থাপনে নীতিগত ও আইনগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ;
- ইউডিসি স্থাপনের জন্য মাঠ পর্যায়ে সার্কুলার জারি করা;
- জাতীয় পর্যায়ে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা;
- ইউডিসির জন্য আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য দাতা সংস্থাও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান কে এ কার্যক্রমেরসাথে সম্পৃক্ত করা;
- কাজের সুষ্ঠু সমন্বয়ের জন্য আন্তমন্ত্রনালয় সংযোগ স্থাপনে সহায়তা প্রদান করা;
- ইউডিসি’র কাজের পরিবিক্ষণ ও মূল্যায়ণ করা;
- পাক্ষিক প্রতিবেদন প্রণয়ন।
৩.৫ একসেস্-টু-ইনফরমেশন (A2I) প্রোগ্রাম–এর ভূমিকা:
- এটুআই ইউডিসির জন্য ডিজিটাল তথ্যভান্ডার তৈরি করে তা বিনামূল্যে সরবরাহ করবে এবং
- ইউনিয়ন পরিষদ এবং উদ্যোক্তার সামর্থ্যের বিকাশ ঘটাতে (Capacity Building) কারিগরি সহায়তা দেবে।
৩.৬ উন্নয়ন সহযোগী ও এনজিওদের ভূমিকা:
- প্রকল্পভিত্তিক আর্থিক ও কারিগরী সহায়তা প্রদান;
- এলাকাভিত্তিক স্বেচ্ছাশ্রম ও অর্থায়নের মাধ্যমে একর্মসূচি বাস্তবায়নে সার্বিক সহায়তা করা;
৩.৭ টেকনিক্যাল সাপোর্ট অর্গানাইজেশনের ভূমিকা:
- দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা প্রদান;
- উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা প্রদান;
- স্থানীয় উদ্যোক্তা নির্বাচনে সহায়তা প্রদান করা;
- অপারেশন ও মেইন্টেনেন্স এর জন্য সুনির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে কারিগরী সহায়তা প্রদান।
৪. প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো:
৪.১ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের শর্তাবলী:
ইউডিসি স্থাপনের জন্য-
১. ১ম পর্যায়ের উপযোগী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে-
- নতুন ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স;
- বিদ্যুৎ সংযোগ;
- কম্পিউটার ও প্রিন্টার আছে এমন ইউনিয়ন;
- ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন বা কাছাকাছি হাট-বাজার;
- ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় সবসময় স্থানীয় মানুষের সমাগম;
- ইউনিয়ন পরিষদ বিশেষ করে উদ্যোগী চেয়ারম্যান;
- স্থানীয় বেকার যুবক ইউডিসি পরিচালনা করার আগ্রহ ইত্যাদি।
২. ২য় পর্যায়ে রয়েছে-
- নতুন ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স নেই তবে পুরাতন ভবন ব্যবহারযোগ্য;
- বিদ্যুৎ সংযোগ আছে;
- কম্পিউটার ও প্রিন্টার না থাকলেও এলজিএসপি ও রাজস্ব তহবিল থেকে কেনা যাবে;
- ইউনিয়ন পরিষদ বিশেষ করে উদ্যোগী চেয়ারম্যান;
- স্থানীয় বেকার যুবক ইউডিসি পরিচালনা করার আগ্রহ ইত্যাদি।
৩. ৩ য় পর্যায়ে রয়েছে-
- বিদ্যুৎ সংযোগ নেই এমন ইউনিয়ন সেখানে সোলার প্যানেল বসানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে;
- কম্পিউটার ও প্রিন্টার না থাকলেও এলজিএসপি ও রাজস্ব তহবিল থেকে কেনা যাবে;
- ইউনিয়ন পরিষদ বিশেষ করে উদ্যোগী চেয়ারম্যান;
৪.২ ইউডিসি ব্যবস্থাপনা :
ইউডিসিপরিচালনার জন্য ৭-৯ সদস্যের ‘ইউডিসি পরিচালনা কমিটি’ থাকবে। ইউনিয়নপরিষদের চেয়ারম্যান পদাধিকার বলে এই কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকরবেন। এ কমিটির মেয়াদ হবে দু’বছর। ইউডিসি’র সাধারণ কমিটির সদস্যদেরসরাসরি ভোটে ইউডিসি পরিচালনা কমিটি গঠিত হবে। তবে একটি পূর্নাঙ্গ কমিটিনির্বাচিত হওয়ার পূর্বে প্রথম বছর সর্বোচ্চ এক বছরের জন্য ইউনিয়ন পরিষদসদস্যগণ এলাকাবাসীদের মধ্যে সৎ, উদ্যোগী ও দক্ষ লোকের সমন্বয়ে একটি এড-হককমিটি গঠন করবে। কমিটির মোট সদস্যে কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশ সদস্য নারী হবেন; কমিটিতে বিভিন্ন পেশার মানুষের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। ইউনিয়ন পরিষদের সচিবকমিটির দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক ও অন্যন্য সহযোগিতা প্রদানকরবেন।
ইউডিসি সাধারণ কমিটি’র গঠন হবে নিম্নরূপ-
1) ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ (পদাধিকার বলে);
2) ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত সকল সরকারী কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ (পদাধিকার বলে);
3) ইউনিয়ন পরিষদের সকল সরকারী ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ (পদাধিকার বলে);
4) সরকার অনুমোদিত পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনের প্রধানগণ (পদাধিকার বলে);
5) ইউডিসিপরিচালনায় উৎসাহী এবং এলাকায় গ্রহণযোগ্য ব্যাক্তিদের মধ্যথেকে ওয়ার্ডপ্রতি কমপক্ষে ০৬(ছয়) জন ব্যক্তি স্থানীয় জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে কমিটিরসাধারণ সদস্য হিসেবে অর্ন্তভুক্ত হবেন। ওয়ার্ড মেম্বরগণ,স্থানীয় ওয়ার্ডেরশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের (মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ইত্যাদি) প্রধানগণ আলোচনা সাপেক্ষে ওয়ার্ড প্রতিনিধিমনোনয়ন করবেন।
ইউডিসি কার্যনির্বাহী কমিটির গঠন হবে নিম্নরূপ-
1) সভাপতি- ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (পদাধিকার বলে)
2) সহ-সভাপতি - সাধারণ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত
3) সাধারণ সম্পাদক- সাধারণ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত
4) অর্থ নম্পাদক- সাধারণ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত
5) সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণ ও প্রচার সম্পাদক- সাধারণ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত
6) দপ্তর সম্পাদক- সাধারণ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত
7) নির্বাহী সদস্য (তিন জন)- সাধারণ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত
৪.৩ ব্যবস্থাপনা কমিটির দায়িত্ব:
‘ইউডিসি পরিচালনা কমিটি’ ইউডিসি পরিচালনার সার্বিক দায়িত্ব পালন করবে। এ কমিটির সুনির্দিষ্ট দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে-
- স্থানীয় উদ্যোক্তা নির্বাচন;
- ইউডিসির প্রয়োজনীয় উপকরণ ক্রয় ও সংগ্রহ;
- ইউডিসির উপকরণ স্থাপন ও রক্ষনাবেক্ষন কাজে উদ্যোক্তাকে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান করা;
- এলাকার জনগনের মাঝে তথ্যসেবা গ্রহনে ব্যপক আগ্রহ সৃষ্টির জন্য উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সার্বিক সহায়তা প্রদান করা;
- ইউডিসির আয়-ব্যযের হিসাব এবং রিপোটিং পদ্ধতি যথাযথভাবে সম্পন্ন করার উদ্যোক্তাকে সার্বিক সহয়তা প্রদান করা;
- প্রতি মাসে কমপক্ষে একটি সভা আয়োজন করে ইউডিসির কার্যক্রম পর্য়ালোচনা করা;
- দ্বিবার্ষিক সাধারণসভা আয়োজন করে ইউডিসি’র আয়-ব্যয়ের হিসাব ও পূর্নাঙ্গ প্রতিবেদন সাধারণ সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন করা।
৪.৪ স্থানীয় উদ্যোক্তা:
কম্পিউটারব্যবহারের নূন্যতম ধারনা রয়েছে এলাকার এমন শিক্ষিত যুবকদের মধ্য থেকেউদ্যোক্তা নির্বাচন করতে হবে। তবে মহিলা এবং বেকার যুবকদের অগ্রাধিকার দিতেহবে। ‘ইউডিসি পরিচালনা কমিটি’ সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে উদ্যেক্তানির্বাচন করবে। ইউডিসি পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত উদ্যোক্তাগণ ইউনিয়নপরিষদের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারী হবেন না। ইউডিসি স্থাপনের মোট খরচের একটিঅংশ তারা প্রদান করবেন। বিনিময়ে তারা ইউডিসি স্থাপনের পরবর্তী তিন বছরইউডিসি থেকে প্রাপ্ত আয় নিজেরা গ্রহণ করবেন। তিন বছর পর উদ্যোক্তা ওইউনিয়ন পরিষদের পারষ্পরিক স্বার্থ বিবেচনায় রেখে ইউনিয়ন পরিষদ আয়-ব্যয়েরবন্টন নীতিমালা নির্ধারন করবে।
৪.৫স্থানীয় উদ্যোক্তা নির্বাচনের শর্তাবলী:
- স্থানীয় উদ্যোক্তা (শিক্ষিত বেকার যুবক)- যার ২০,০০০ - ৫০,০০০ বা তারও অধিক টাকা বিনিয়োগ করার সামর্থ্য ও আগ্রহ রয়েছে;
- যিনি উদ্যোগী, পরিশ্রমী ও সংগঠক;
- এলাকার জনগণকে তথ্য সেবা গ্রহণে আগ্রহী করে তোলার জন্য প্রয়োজনী উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি পরিচালনা করার আগ্রহ ও দক্ষতা;
- এলাকায় যিনি স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন;
- নৈতিক স্খলন বা শৃঙ্খলা বিরোধী কাজে অভিযুক্ত নয়;
- যার কম্পিউটার পরিচালনা ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা বা আগ্রহ আছে;
- যার ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য তথ্যসেবা নিয়ে কাজ করার আগ্রহ আছে।
৪.৬ স্থানীয় উদ্যোক্তার দায়িত্ব ও কর্তব্য
- ইউডিসি পরিচালনা কমিটি’র অনুমোদন সাপেক্ষে দিনের নির্দিষ্ট সময় ইউডিসি জনগণের সেবা গ্রহণের জন্য খোলা রাখা;
- জনগণকে তথ্যসেবা প্রদান করা;
- ইউডিসির উপকরণ স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ করা;
- এলাকার জনগনের মাঝে তথ্যসেবা গ্রহণে ব্যপক আগ্রহ সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা;
- ইউডিসির আয়-ব্যযের হিসাব এবং রিপোটিং যথাযথভাবে সম্পন্ন করা;
- ইউডিসি পরিচালনা কমিটি’র মাসিক/দ্বিবার্ষিক বা অন্যান্য সভায় কমিটির চাহিদা অনুসারে প্রযোজনীয় তথ্য প্রদান করা।
৫. অবকাঠামো:
ইউনিয়নপরিষদের একটি উপযুক্ত কক্ষে ইউডিসি স্থাপিত হবে। ইউনিয়ন পরিষদ একেন্দ্রের সার্বিক নিরাপত্তা এবং কেন্দ্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয়প্রশাসনিক সহায়তা প্রদান করবে।
৬. উপকরণ:
এলাকারসর্বসাধারণের জন্য উন্নত তথ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি ইউডিসিতেএকাধিক কম্পিউটার ও সংশ্লিষ্ট উপকরণ প্রয়োজন হবে, যা পর্যায়ক্রমে স্থাপনকরা সম্ভব। তবে নূন্যতম স্ট্যাবিলাইজারসহ একটি কম্পিউটার, একটি সাদাকালোপ্রিন্টার, একটি কালার প্রিন্টার, অন-লাইন সংযোগ স্থাপনের জন্য একটি মডেম, একটি স্ক্যানার, একটি ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে একটি ইউডিসি-এর কার্যক্রমপ্রাথমিকভাবে শুরু করা সম্ভব। প্রাথমিক পর্যায়ে এ কাজের জন্য সর্বসাকুল্যে১০০,০০০ (এক লক্ষ) টাকা প্রয়োজন হতে পারে। তবে পূর্ণাঙ্গ ইউডিসিপরিচালনার জন্য নিম্ন লিখিত উপকরণ দরকার -
· স্ট্যাবিলাইজারসহ ২টি কম্পিউটার
· ১টি লেজার প্রিন্টার
· ১টি কালার প্রিন্টার
· ১টি মডেম
· ১টি স্ক্যানার মেশিন
· ১টি ডিজিটাল ক্যামেরা
· ১টি ওয়েবক্যাম
· বড় স্ক্রিনসহ ১টি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর
· ১টি জেনারেটর
স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে কোন ইউডিসিতে উপরকরণ এর চেয়ে কম বেশি থাকতে পারে।
৭. দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম:
ইউডিসিপরিচালনাকারী উদ্যোক্তাদের প্রযোজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এপ্রশিক্ষণ কর্মসূচি কেন্দ্রীয় ভাবে এবং স্থানীয় ভাবে (যখন যা প্রযোজ্য)আয়োজন করা হবে। পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা ফোকাল পয়েন্ট এবং এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্নকমিটির সদস্যদের এ কর্মসূচি সম্পর্কে সার্বিক ধারণা প্রদান করার জন্য সময়সময় অরিয়েন্টেশন কর্মশালা আয়োজন করা হবে।
৮. উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম:
ইউডিসিথেকে তথ্য সেবা গ্রহণে ব্যপক জনগোষ্ঠিকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন ধরনেরউদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি গ্রহন করা হবে। এ কর্মসূচি স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়েবাস্তবায়ন করা হবে। জাতীয় পর্যায়ের উল্লেখযোগ্য কর্মসূচির মধ্যে থাকবে-টিভি ও রেডিও প্রোগ্রাম, সংবাদপত্রে প্রতিবেদন ও ফিচার, সেমিনার, কর্মশালাইত্যাদি। স্থানীয় পর্যায়ে মূলতঃ উদ্যোক্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের যৌথ উদ্যোগেব্যাক্তিগত যোগাযোগ, সভা-সমাবেশ, র্যালি, মাইকিং, হাটবাজারে প্রদর্শনী, লিফলেট, পোষ্টার, স্টিকার বিতরণ, স্কুল-কলেজ পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতারআয়োজন ইত্যাদি কর্মসূচি বাস্তবায়ন। একাজে উপজেলা ও জেলা ফোকাল পয়েন্টবৃন্দসক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।
ইউডিসিতে তথ্যসেবার তালিকা
ইউডিসিরতথ্যভান্ডারে তথ্যসেবা থাকবে দু’ভাবে - অফলাইন ও অনলাইনে। এই তথ্যভান্ডারতথ্য ও সেবা সাজানো থাকবে এনিমেশন, ভিডিও, অডিও এবং টেক্সট এই চার ফরমেটে।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য (অনলাইন):ইউডিসিতেইন্টারনেট সংযোগ থাকবে যার মাধ্যমে ইউনিয়নের যে কোন ব্যক্তি সারা পৃথিবীরসাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হবে। দেশি ও বিদেশী বিভিন্ন ওয়েব সাইট থেকেপ্রয়োজন অনুযায়ী যে কোন তথ্য এর মাধ্যমে খুঁজে পাওয়া সম্ভব।
অফলাইন তথ্যভান্ডার :ইন্টারনেটেরবাইরে এক বিশাল তথ্যভান্ডার থাকবে ইউডিসিতে। এই (অফলাইন) তথ্যভান্ডারেথাকবে জীবিকাভিত্তিক বিভিন্ন তথ্যসেবা; যেমন - কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আইন ও মানবাধিকার, কর্মসংস্থান, বাজার, বিভিন্ন সরকারী ফরম প্রভৃতি।
বাণিজ্যিক সেবা (১):ইউডিসিতেসুলভ মূল্যে বাণিজ্যিক সেবা পাওয়া যাবে; যেমন - ইমেইল পাঠানো, ইন্টারনেটব্রাউজিং করা, কম্পিউটার কম্পোজ করা, প্রিন্টিং করা, ফটোতোলা (কালার), স্ক্যানিং করা, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ভাড়া নেয়া প্রভৃতি।
বাণিজ্যিক সেবা (২):ইউডিসিতেসুলভ মূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ এবং বিভিন্ন দক্ষতাবৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণএর ব্যবস্থা থাকবে। দক্ষতাবৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ হবে সহজ, সুলভ ও স্থানীয়প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন আয় বৃদ্ধিমূলক উদ্যোগ এর উপর; যেমন -বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য তৈরি, বিভিন্ন শিল্প উপকরণ তৈরি (যেমন - মোমবাতি), টেইলারিং, বৈদ্যুতিক উপকরণ মেরামত, জৈব সার উৎপাদন প্রভৃতি।
পরামর্শ সেবা:ইউনিয়নপরিষদ ইউডিসি থেকে যাতে করে সরকারী কর্মকর্তাদের (যেমন কৃষি, স্বাস্থ্যপ্রভৃতি) নিয়মিত পরামর্শ সেবা পাওয়া যায় তা নিশ্চিত করবে। পরামর্শ সেবারমধ্যে থাকবে মাটি পরীক্ষা, সার, কীটনাশক, মাছ চাষ, স্বাস্থ্য, ভূমিরেজিস্ট্রেশন, আইন প্রভৃতি বিষয়ে পরামর্শ। যে সকল বেসরকারী সংস্থা (এনজিও)ইউনিয়নভিত্তিক কাজ করে তারাও একইভাবে পরামর্শ সেবা প্রদান করবে।
তথ্য ও সেবার মূল্য
ইউডিসি অফলাইন তথ্যভান্ডারের সকল তথ্য বিনামূল্যে সরবরাহ করবে। তবে অফলাইনের কোনতথ্য ও সেবা টেক্সট আকারে প্রিন্ট করে নিতে হলে তার জন্য ইউডিসি কর্তৃকনির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করতে হবে। অনলাইনভিত্তিক সকল তথ্য ও সেবা মূল্যপরিশোধ করে সংগ্রহ করতে হবে। সকল বাণিজ্যিক সেবা ইউডিসি কর্তৃক নির্ধারিতমূল্য পরিশোধ করে সংগ্রহ করতে হবে। তবে সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তাদেরপরামর্শ সেবা বিনামূল্যে পাওয়া যাবে।
সি থেকে যাতে করে সরকারী কর্মকর্তাদের (যেমন কৃষি, স্বাস্থ্য প্রভৃতি) নিয়মিত পরামর্শ সেবা পাওয়া যায় তা নিশ্চিত করবে। পরামর্শ সেবার মধ্যে থাকবে মাটি পরীক্ষা, সার, কীটনাশক, মাছ চাষ, স্বাস্থ্য, ভূমি রেজিস্ট্রেশন, আইন প্রভৃতি বিষয়ে পরামর্শ। যে সকল বেসরকারী সংস্থা (এনজিও) ইউনিয়নভিত্তিক কাজ করে তারাও একইভাবে পরামর্শ সেবা প্রদান করবে।
তথ্য ও সেবার মূল্য
ইউআইএসসি অফলাইন তথ্যভান্ডারের সকল তথ্য বিনামূল্যে সরবরাহ করবে। তবে অফলাইনের কোন তথ্য ও সেবা টেক্সট আকারে প্রিন্ট করে নিতে হলে তার জন্য ইউআইএসসি কর্তৃক নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করতে হবে। অনলাইনভিত্তিক সকল তথ্য ও সেবা মূল্য পরিশোধ করে সংগ্রহ করতে হবে। সকল বাণিজ্যিক সেবা ইউআইএসসি কর্তৃক নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করে সংগ্রহ করতে হবে। তবে সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তাদের পরামর্শ সেবা বিনামূল্যে পাওয়া যাবে।